Chapter 6
Class 7 Sahityamela
স্মৃতিচিহ্ন
অধ্যায় ২০
স্মৃতিচিহ্ন
কবি পরিচয়
উনবিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ মহিলাকবি কামিনী রায় ১৮৬৪ খ্রিস্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর জন্মস্থান হল বর্তমান বাংলাদেশের বরিশাল জেলার বাসন্ডা গ্রাম। তাঁর পিতা ছিলেন চন্ডীচরণ সেন। খুব অল্প বয়স থেকেই তিনি কবিতা লেখা শুরু করেন। মাত্র ১৫ বছর বয়সে তাঁর সর্বাপেক্ষা বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ ‘আলো ও ছায়া’ (১৮৮৯) প্রকাশিত হয়। কলকাতার বেথুন কলেজ থেকে সংস্কৃতে বি. এ. পাশ করে, ওখানেই অধ্যাপনার কাজ শুরু করেন। তিনি নারী শ্রমিকদের উন্নতির জন্য সমাজসেবায় নিযুক্ত ছিলেন। তাঁর অন্যান্য উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলি হল-‘মহাশ্বেতা’, ‘পুন্ডরীক’, ‘পৌরাণিকী’, ‘দীপ ও ধূপ’, ‘নির্মাল্য’, ‘মাল্য ও নির্মাল্য, ‘জীবনপথে’, ‘অশোক সংগীত’ প্রভৃতি।
১৯২৯ সালে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় তাঁকে ‘জগত্তারিণী স্বর্ণপদক’ দিয়ে সম্মানিত করে। বাংলা সাহিত্যের এই উল্লেখযোগ্য কবি ১৯৩৩ সালে পরলোকগমন করেন।
বিষয়বস্তু
‘স্মৃতিচিহ্ন’ কবিতায় জীবনের এক চিরন্তন সত্য সহজ সরল ভঙ্গিতে প্রকাশ পেয়েছে। যে স্মৃতি চিরদিন অক্ষয় হয়ে থাকে তার কথা এখানে বলা হয়েছে। যারা ক্ষমতায় বলীয়ান, অর্থশালী, রাজা-মহারাজা, তারা প্রচুর অর্থ ব্যয় করে বিশাল বিশাল অট্টালিকা, স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করে, সোনার অক্ষরে নিজেদের নাম খোদাই করে রেখে যায়। তারা ভাবে এতেই তারা চিরদিন বেঁচে থাকবে।
কিন্তু তাদের সেই বড়ো বড়ো অট্টালিকার ইট, কাঠ, বালি, পাথর, মাটিতে লুটিয়ে পড়ে। শুকনো ঘাস যেমন নদীর জলে ভেসে যায়, তেমনি সেই রাজা-মহারাজাদের নামও সময়ের স্রোতে হারিয়ে যায়। কিন্তু যাঁরা মানুষের হৃদয়ে স্থান লাভ করেছেন তাঁরা হারিয়ে যাননি। দরিদ্র ছিলেন তাঁরা, তাঁদের ছিল না কোনো ধনবল কিন্তু তাঁরা তাঁদের যৎসামান্য সম্বল নিয়ে মানব প্রেমের সাধনা করেছেন।
মানুষের কল্যাণের জন্য তাঁর সবসময় চেষ্টা করে গেছেন। তাঁরা কোনো অট্টালিকা, স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করতে পারেননি। কিন্তু তাঁদের সবাই মনে রেখেছে। মানুষের হৃদয়ে তাঁদের নাম আরও উজ্জ্বল হয়ে ওঠে দিন যাপনের সঙ্গে সঙ্গে।
• নামকরণের সার্থকতা
‘স্মৃতিচিহ্ন’ নির্ভর করেই মানুষ বেঁচে থাকে চিরকাল। কিন্তু সে স্মৃতিচিহ্ন কেমন হবে; কী করলে মানুষের মনে চিরস্থায়ী জায়গা পাওয়া যায় তার সুন্দর বিবরণ দেওয়া আছে কবিতাটিতে।
যাঁরা মনে করে বিশাল অট্টালিকা তৈরির মধ্যে দিয়ে নিজেদের নাম এই ধরণীর বুকে রেখে যাবেন, তাঁরা ভুল করেছেন। কেননা, আর্থিক সমৃদ্ধির কারণে কোনো মানুষ পৃথিবীতে নিজের নাম স্থায়ী করে রাখবেন, এটা আদৌ সম্ভব নয়। গৌতম-বুদ্ধ, শ্রীচৈতন্য, শ্রীরামকৃষ্ণ প্রত্যেকেই অর্থের কৌলীন্য ত্যাগ করে মানুষের কাছে এসে দাঁড়িয়েছিলেন। ফলে অর্থ নয়, মানুষের কল্যাণেই মানুষের স্মৃতিচিহ্ন এই জগতে রয়ে যাবে। এই দৃষ্টিকোণ থেকে এই কবিতাটির ‘স্মৃতিচিহ্ন’ নামকরণ যথার্থ হয়েছে।
• সঠিক অর্থঅভিধান
মনোহর-মন হরণ করে যা। হ্য-অট্টালিকা। ইষ্টক- প্রস্তর।
ইট-পাথর। রচি-রচনা করি। মূঢ়-মূর্খ। মনস্কাম- মনের ইচ্ছা বা
কামনা। ভূমে-মাটিতে। ভগ্ন-ভেঙে গেছে যা। হের-দেখ। ধৌত-ধোওয়া। নিত্য-সবসময়।
নীচের প্রশ্নগুলির সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও :
(ক) মহৎ মানুষদের জীবনকথা আমরা পাঠ করে থাকি কেন?
উত্তর:
(খ) অত্যাচারী কোন্ কোন্ সাম্রাজ্যলোভী জাতির কথা তুমি ইতিহাস পড়ে জেনেছো? (Open Ended Question)
উত্তর:
(গ) অতীত ইতিহাসের ধূসর হয়ে আসা কোন্ স্মারক/ সৌধ/মিনার তুমি দেখেছ? (Open Ended Question)
উত্তর:
(ঘ) তোমার দৃষ্টিতে কাদের কথা সমাজের সকলের চিরকাল মনে রাখা উচিত? (Open Ended Question)
উত্তর:
(ঙ) মানুষ নিজেকে স্মরণীয় করে রাখতে চায় কেন?
(Open Ended Question)
উত্তর:
১. নীচের বিবৃতিগুলির মধ্যে যেগুলি ঠিক তাদের পাশে ” চিহ্ন আর যেগুলো ভুল তাদের পাশে ‘X’ চিহ্ন দাও:
১.১ ইট-পাথরে গড়া সৌধ কাউকে চিরস্মরণীয় করে রাখে না।
উত্তর:
১.২ যাঁরা নিজেদের সৌধ গড়ে কীর্তিকে অমর করে রাখতে চান তাঁরা বরেণ্য।
উত্তর:
১.৩ সাধারণ মানুষের মনে যাঁরা স্থান পেয়েছেন, তাঁদের নাম ভেসে যায়।
উত্তর:
১.৪ এমন বহু সহায়-সম্বলহীন, দরিদ্র মানুষ আছেন, মহাকাল যাঁদের স্মৃতি মুছে দিতে পারেনি।
উত্তর:
১.৫ ‘মানব হৃদয়-ভূমি’ অধিকার করতে হলে মানুষের জন্য কল্যাণকর কাজ করতে হবে।
উত্তর:
২. কবিতা থেকে শব্দ চয়ন করে নীচে প্রদত্ত কবিতাংশের
শূন্যস্থানপূরণ করো:
‘ওরা ভেবেছিল— আপনার নাম
মনোহর—বিশাল
ইস্টক—রচি চিরদিন
রেখে—-
উত্তর:
৩. নীচে দেওয়া শব্দগুলির বিপরীতার্থক শব্দ লেখো:
উত্তর:
৪. নীচের বিশেষ্যগুলিকে বিশেষণে ও বিশেষণগুলিকে বিশেষ্যে রূপান্তরিত করো: নাম, মনোহর, প্রস্তর, মূঢ়, ব্যর্থ, ভগ্ন, স্তূপ, স্মৃতি, রক্ষা, মানব, হৃদয়, দৃঢ়, দরিদ্র।
উত্তর:
বিশেষ্য | বিশেষণ | বিশেষ্য | বিশেষণ | বিশেষ্য | বিশেষণ |
নাম মনোহরণ প্রস্তর মূঢ়তা মানব | নামে মনোহর প্রস্তরময় দৃঢ় মানবিক | ব্যর্থতা ভঙ্গ স্তূপ স্মৃতি | ব্যর্থ ভগ্ন স্তূপাকার স্মার্ত | হৃদয় দৃঢ়তা দারিদ্র্য রক্ষা | হার্দিক দৃঢ় দরিদ্র রক্ষিত |
৫. নীচের শব্দগুলিকে বাক্যে ব্যবহার করো:
অক্ষর, চিরদিন, স্মৃতি, মানব, রক্ষা, অধিকার, সম্বল, প্রতিষ্ঠা।
উত্তর
৬. নীচের শব্দগুলির সন্ধি বিচ্ছেদ করো:
উত্তর:
৭. নীচের শব্দগুলির গদ্যরূপ লেখো:
উত্তর:
৮. সমার্থক শব্দ লেখো:
উত্তর:
৯. নীচের প্রশ্নগুলির সংক্ষিপ্ত ও যথাযথ উত্তর দাও :
৯.১ ‘স্মৃতিচিহ্ন’ কবিতাটি কার রচনা?
উত্তর:
৯.২ কবিতাটি তাঁর কোন কাব্যগ্রন্থের অন্তর্ভুক্ত।
উত্তর:
৯.৩ কবিতাটি কী জাতীয় রচনা?
উত্তর:
৯.৪ কবিতায় কবি কাদের ‘মূঢ়’ ও ‘ব্যর্থ মনস্কাম’ বলেছেন?
উত্তর:
৯.৫ তাদের স্মৃতি কীভাবে লুপ্ত হয়ে যায়?
উত্তর:
৯.৭ ‘কাল’-কে কবিতায় কীসের সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে?
উত্তর:
৯.৮ কবিতায় ‘শুল্ক তৃণ’ বলতে কবি কী বুঝিয়েছেন?
উত্তর:
১০. তিন-চারটি বাক্যে নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর দাও:
১০.১ “ওরা ভেবেছিল মনে…” কাদের কথা বলা হয়েছে? তারা
কী ভেবেছিল?**
উত্তরের প্রথমাংশ:
উত্তরের দ্বিতীয়াংশ:
১০.২ ‘মূঢ় ওরা’-কবিতায় তাদের মূঢ় বলার কারণ কী?
উত্তর:
১০.৩ ‘কেবা রক্ষা করে’- কী রক্ষা করার কথা বলা হয়েছে?
তা রক্ষা করা সম্ভব হচ্ছে না কেন?***
উত্তর:
১০.৪ ‘দরিদ্র আছিল তারা’- কাদের কথা বলা হয়েছে? তাদের রাজত্ব কীভাবে অক্ষুণ্ণ রয়েছে বলে কবি মনে করেন?***
উত্তর:
১০.৫ কালস্রোতে কাদের নাম ধুয়ে যায়? সেই স্রোত কাদের স্মৃতি গ্রাস করতে পারে না? **
উত্তর:
১০.৬ ‘মানবহৃদয়-ভূমি করি অধিকার’- কারা, কীভাবে মানবহৃদয়ভূমি
অধিকার করে?’***
উত্তরের প্রথমাংশ:
উত্তরের দ্বিতীয়াংশ:
সমুজ্জ্বল’ বলেছেন?***
উত্তর:
১০.৮ তোমার দৃষ্টিতে মানুষের স্মরণীয় হয়ে থাকার শ্রেষ্ঠ পন্থাটি কী?
উত্তর:
১১. স্মরণীয় কয়েকজন বাঙালি মনীষীর চিত্র ও বাণীসংবলিত একটি চার্ট তৈরি করো।
উত্তর:
১২। তুমি যাঁর জীবনের কথা জেনে অনুপ্রাণিত, এমন একজন মনীষীর জীবনের কোনো বিশেষ ঘটনার কথা বন্ধুকে লিখেজানাও/ সে সম্বন্ধে দেয়াল পত্রিকায় লেখা প্রকাশ করে।
—————————————————————————————————————-
উত্তর-
—————————————————————————————————————-
১৩. কবিতাটি থেকে যে শিক্ষা পেলে, সে বিষয়ে একটি অনুচ্ছেদ রচনা করো।
—————————————————————————————————————
উত্তর:
সংযোজিত প্রশ্ন
একটি বাক্যে উত্তর দাও:
১. “প্রস্তর খসিছে ভূমে প্রস্তরের ‘পরে “-কার লেখা কোন্ কবিতার অংশ? কোন্ প্রসঙ্গে এটি লেখা হয়েছে?
উত্তর:
২. ‘দরিদ্র আছিল তারা, ছিল না সম্বল’- কার লেখা কোন্ কবিতার অংশ? ‘সম্বল’ কথাটির অর্থ কী? কবিতায় তাদের পরিণতি কী হয়েছে?
উত্তর:
ব্যা ক র ণে র স হ জ পা ঠ
১. সমার্থক শব্দ লেখো:
অক্ষর, প্রস্তর, ব্যর্থ, ভগ্ন, লুপ্ত, স্মৃতি, শুষ্ক, তৃণ, হৃদয়, সিংহাসন, নিত্য, সমুজ্জ্বল।
উত্তর: