Chapter 2
Class 7 Sahityamela
বঙ্গভূমির প্রতি
অধ্যায় ৪
বঙ্গভূমির প্রতি
• কবি-পরিচিত
মাইকেল মধুসুদন দত্ত-র (১৮২৪-১৮৭৩) জন্ম অধুনা বাংলাদেশের যশোহর জেলার সাগরদাঁড়ি গ্রামে। পিতা প্রখ্যাত আইনজীবী রাজনারায়ণ দত্ত, মাতা জাহুবী দেবী। বাংলা কাব্যে নতুন যুগ আসে তাঁর কলমে, নাটকেও জাগে নতুন ধারা। ইংরেজি ভাষায় ‘The Captive Ladie এবং ‘Visions of the Past’ নামে দুটি গ্রন্থ রচনা করলেও তিনি স্মরণীয় হয়ে আছেন ‘মেঘনাদবধ কাব্য’, ‘বীরাঙ্গনা কাব্য’, ‘ব্রজাঙ্গনা কাব্য’, ‘তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য’, ‘চতুর্দশপদী কবিতাবলী’-র রচয়িতা হিসেবে। ‘শর্মিষ্ঠা’, ‘পদ্মাবতী’, ‘কুয়কুমারী’ প্রভৃতি নাটক এবং ‘একেই কি বলে সভ্যতা?’ আর ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ’ প্রহসনের স্রষ্টা তিনিই। বাংলা সাহিত্যে অমিত্রাক্ষর ছন্দের ব্যবহারও তাঁরই দান।
কবির বৈশিষ্ট্য
১. ভারতীয় পুরাণকে নতুনভাবে উপস্থাপন করেছেন।
২. অমিত্রাক্ষর ছন্দের প্রণয়ন করেছেন।
৩. উনিশ শতকের মহাকাব্যধারার নতুন পথ সৃষ্টি করেছেন।
৪. তিনি একই সঙ্গে ক্লাসিক ও রোমান্টিকপন্থী কবি।
• কবিতার বিষয়বস্তু
মধুসূদনের দুটি লিরিক কবিতা বিখ্যাত। একটি তাঁর বিদেশ গমনের প্রাক্কালে ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দে দেশমাতৃকাকে উদ্দেশ্য করে লেখা। ‘My native land, Good night’- বাইরনের এই পঙ্ক্তি শিরোদেশে স্থাপন করে তিনি ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতাটি রচনা করেন। কবির উচ্চ আশা এবং মোহভঙ্গ জনিত ব্যাকুল আর্তি অবলম্বনে লেখা অন্য একটি
অসামান্য কবিতা হল ‘আত্মবিলাপ’।
‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতায় মাতৃভূমির প্রতি কবির গভীর ভালোবাসা
প্রকাশ পেয়েছে। কবিতাটির মূল বিষয় হল-কবি মাতৃভূমির কাছে মিনতি করে বলেছেন, তাঁকে যেন মাতৃভূমি মনে রাখেন। তাঁর মনপদ্মের মধু থেকে তাঁকে যেন বঞ্চিত না করেন। বিদেশে কবির জীবনতারা যদি খসে যায়, তাতে কবির কোনো দুঃখ নেই। কারণ এই নশ্বর পৃথিবীতে কেউ চিরজীবী, চিরস্থায়ী হয় না।
কিন্তু যদি মাতা কবিকে মনে রাখেন, তাহলে কবি শমনেও ভয় পাবেন না। যাকে লোকে মনের মন্দিরে স্থাপন করে পূজা দেন, পৃথিবীতে সেই মানুষই ধন্য। কিন্তু কবির সেইটুকু চাওয়ারও মুখ নেই। তাই কবি বঙ্গভূমির কাছে এইটুকুই আবেদন রেখেছেন- কবির সমস্ত দোষভুলে, শুধুমাত্র গুণটুকু নিয়ে বঙ্গভূমি যেন কবিকে তাঁর কোলে স্থান দেন।
• নামকরণের সার্থকতা
বঙ্গভূমিকে ‘মা’ বলে সম্বোধন করে কবি বলেছেন-বঙ্গভূমি যেন তাঁকে মনে রাখেন। কেননা, তিনি যদি ভুল করে থাকেন, তাহলে সেই ভুলও সংশোধন করে দেওয়ার দায়িত্ব বন্ধঙ্গজননীর। কবির এমন কোনো গুণ নেই যে, তিনি অমরত্ব লাভ করবেন। তবু বঙ্গভূমির কাছে প্রার্থনা করেছেন, বঙ্গভূমি যেন তাঁর দোষ-ত্রুটি ক্ষমা করেন। তিনি ভুলবশত বঙ্গভূমিকে ত্যাগ করেছিলেন। নিজের ভুল উপলব্ধি করে পুনরায় তাঁর কাছে ফিরে এসেছেন। অতএব ‘শ্যামা জন্মদে’ যেন দয়া করে কবিকে তাঁর কাছে স্থান দেন। ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ সুগভীর ভালোবাসার কারণে এই কবিতার নামকরণ হয়েছে সার্থক।
• সঠিক অর্থ অভিধান
মিনতি-অনুনয়, আবেদন। পরমাদ-‘প্রমাদ’-এর পরিবর্তিত (কোমল) রূপ। ভুল-অনবধানতা, বিস্মৃতি। কোকনদ-লাল পদ্ম। প্রবাস-বিদেশ। দৈব-অদৃষ্ট ভাগ্য। নীর-জল। শমন- মৃত্যুর দেবতা যম। মক্ষিকা-মাছি। অমৃত-যা পান করলে মৃত্যু হয় না, সুধা। অমৃত হ্রদ-সুধায় পূর্ণ হ্রদ। জন্মদে- ‘জন্মদা’-র সম্বোধন রূপ; জন্ম দেয় যে, জননী। সুবরদে-‘সুবরদা’র সম্বোধন রূপ, সু (শুভ) বর দেন যিনি, বরদাত্রী। মধুময়-মধুতে ভরা, মধু মাখা। তামরস-পদ্ম।
হা তে ক ল মে
১. ঠিক উত্তরটি খুঁজে নিয়ে লেখো:
১.১ ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতায় যে শীর্ষ উল্লেখটি আছে, সেটি কবি বায়রন-এর রচনা। তাঁর রচিত একটি বিখ্যাত গ্রন্থ হলো-
উত্তর:
১.২ লালবর্ণের পদ্ম ‘কোকনদ’। সেরকম নীল রঙের পদ্মকে ও সাদা রঙের পদ্মকে বলা হয়।
উত্তর:
২ . সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও:
২.১ “এ মিনতি করি পদে”-কবি কার কাছে কী প্রার্থনা জানিয়েছেন?***
( কটাই হাই স্কুল, উ.মা)
উত্তর:
২.২ “সেই ধন্য নরকুলে” কোন্ মানুষ নরকুলে ধন্য হন?
উত্তর:
৩. গদ্যরূপ লেখো:
উত্তর:
৪. শূন্যস্থানে উপযুক্ত বিশেষণ বসাও।
মন্দির, হ্রদ, তামরস।
উত্তর:
৫. লাক্ষর অংশগুলির কারকবিভক্তি নির্ণয় করো।
৫.১ রেখো, মা, দাসেরে মনে।
উত্তর:
৫.২ এ দেহ-আকাশ হতে।
উত্তর:
৫.৩ মধুহীন করো না গো তব মনঃকোকনদে।
উত্তর:
৫.৪ মনের মন্দিরে সদা সেবে সর্বজন।
উত্তর:
৫.৫
মক্ষিকাও গলে না গো, পড়িলে অমৃত হ্রদে!
উত্তর:
৬. পদ পরিবর্তন করে বাক্য রচনা করো।
• মধু-মধুময় (বিশেষণ)
বাক্য: মধুময় এই আনন্দ অনুষ্ঠানে আমাকে আহ্বান করার জন্যে
আপনাদের ধন্যবাদ।
• প্রকাশ-প্রকাশিত (বিশেষ্য)
বাক্য : ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতাটি ১৮৬২ খ্রিস্টাব্দে প্রকাশিত হয়।
• দেহ-দৈহিক (বিশেষণ)
বাক্য: দৈহিক শক্তি না থাকলে কর্মঠ হওয়া যায় না।
• অমর-অমরতা (বিশেষ্য)
বাক্য: মানুষ কর্মের মাধ্যমে অমরতা লাভ করতে পারে।
• দোষ-দোষী (বিশেষণ)
বাক্য: অবশেষে দোষী মানুষের সাজা হলো।
• বসন্ত-বাসন্তী (বিশেষণ)
বাক্য: বাসন্তী রঙের কাপড়ে তোমায় খুব সুন্দর দেখাচ্ছে।
◇ দৈব-দেব (বিশেষ্য)
বাক্য: দেব-এর আশীর্বাদে পঙ্গু মানুষটি পাহাড় জয় করেছে।
৭. বিপরীতার্থক শব্দ লেখো।
উত্তর:
৮. ‘পরমাদ’ শব্দটি কোন্ মূল শব্দ থেকে এসেছে?
উত্তর:
৯. কবির নিজেকে বঙ্গভূমির দাস বলার মধ্যে দিয়ে তাঁর কোন্ মনোভাবের পরিচয় মেলে?
উত্তর:
১০. “মধুহীন কোর না গো”- ‘মধু’ শব্দটি কোন্ দুটি অর্থে প্রযুক্ত হয়েছে?
উত্তর:
১১. কবিতা থেকে পাঁচটি উপমা বা তুলনাবাচক শব্দ খুঁজে নিয়ে লেখো।
উত্তর:
১২. ‘মন্দির’ শব্দটির আদি ও প্রচলিত অর্থ দুটি লেখো।***
উত্তর:
১৩. কবিতাটিতে কোন্ কোন্ ঋতুর উল্লেখ রয়েছে?**
উত্তর:
১৪. ‘মানস’ শব্দটি কবিতায় কোন্ কোন্ অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে?***
(হুগলী কলেজিয়েট স্কুল)
উত্তর:
১৫. কবির দৃষ্টিতে নশ্বর মানুষ কীভাবে অমরতা লাভ করতে পারে তা লেখো।
উত্তর:
সংযোজিত প্রশ্ন
একটি বাক্যে উত্তর দাও।
১. মধুসূদন দত্তের জন্ম কবে?
উত্তর:
২. মধুসূদন দত্তের পিতা ও মাতার নাম লেখো।
উত্তর:
৩. মধুসূদন দত্তের ধর্মান্তরিত হওয়ার পর নাম কী হয়েছিল?
উত্তর :
৪. ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতাটি কবে লেখা হয়?
উত্তর:
৫. ‘সাধিতে মনের সাদ’-এখানে ‘সাদ’ শব্দটি ঠিক কোন্ অর্থে প্রয়োগ করা হয়েছে?
উত্তর:
সংক্ষিপ্ত উত্তর দাও।
১. ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতাটি রচনার প্রেক্ষাপট আলোচনা করো।
উত্তর:
২. ‘মক্ষিকাও গলে না গো, পড়িলে অমৃত হ্রদে’।-উক্তিটির তাৎপর্য বিচার করো।
উত্তর:
৩. ‘নাহি খেদ তাহে’ কী হলে কবির মনে কোনো খেদ থাকবে না বলে কবি মনে করেন?**
উত্তর:
৪. ‘চিরস্থায়ী কবে নীর, হায়রে জীবন নদে?’
উত্তর:
৫. ‘দেহ দাসে সুবরদে!’-কী দেওয়ার কথা বলা হয়েছে? কীভাবে
তা পাওয়া সম্ভব বলে কবি মনে করেছেন?
উত্তর:
৬. ‘ফুটি যেন স্মৃতিজালে’-কবি এখানে কী বোঝাতে চেয়েছেন?
উত্তর:
৭. ‘নাহি, মা, ডরি শমনে’-একথা বলার কারণ কী?
উত্তর