Class 7 Sahityamela
গাধার কান
অধ্যায় ৩১
গাধার কান
লেখক পরিচিতি
১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে বিহারের পূর্ণিয়া জেলায় বিখ্যাত সাহিত্যিক শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের জন্ম হয়। তাঁর ঐতিহাসিক উপন্যাসগুলি হল-‘গৌড় মল্লার’, ‘তুঙ্গাভদ্রার তীরে’, ‘তুমি সন্ধ্যার মেঘ’ প্রভৃতি। সত্যান্বেষী ব্যোমকেশ বক্সী তাঁর সৃষ্টি স্মরণীয় চরিত্র। বড়োদের গল্প-উপন্যাস রচনার পাশাপাশি শিশু-কিশোরদের জন্যও তাঁর অনেক রচনা রয়েছে। ‘সদাশিব’ চরিত্রটি হল তাঁর সৃষ্ট শিশুসাহিত্যের নায়ক চরিত্র। ১৯৭০ খ্রি. এই প্রবাদপ্রতিম সাহিত্যিক পরলোকগমন করেন।
বিষয়বস্তু
দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী টাউন স্কুল ও মিশন স্কুলের মধ্যে ফাইনাল ম্যাচ। তাই এই জমজমাট খেলাটি দেখার জন্য সকলেই বেশ উদগ্রীব হয়ে আগেই মাঠে উপস্থিত। টাউনস্কুলের খেলোয়াড়রা গাছ তলায় সাজসজ্জা করছে। তাদের বিশ্বাস গাধার কান মলে মাঠে নামতে পারলে, তাদের জয় নিশ্চিত। এই উদ্দেশ্যসাধনে বেরিয়েছিল টাউন স্কুলের খেলোয়াড় সমরেশ। কিন্তু সে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসে। এই কথাশুনে দলের কনিষ্ঠ খেলোয়াড় টুনুর হাসি পায় এবং এতে সমরেশ প্রচন্ড রেগে যায় ও টুনুর কান মলে দেয়।
রেফারি দিব্যেন্দুবাবুর তত্ত্বাবধানে খেলা শুরু হয়। খেলা একেবারে জমে উঠেছে। কেউ কাউকে গোল দিতে পারছে না। একটি বল নিয়ে টাউন স্কুলের ফরোয়ার্ড টুনু যখন গোলের দিকে যাচ্ছিল তখন বিপক্ষ
দলের খেলোয়াড় এসে তাকে আঘাত করলে তার বুড়ো আঙুলে লাগে। হাফ টাইমের ঠিক আগে মিশন স্কুল একটা গোল দিল। হাফ টাইমের পর আবার খেলা শুরু হল। কিছুক্ষণের মধ্যেই ভাগ্যক্রমে
টুনুর সাহায্যে একটা গোল হয়ে গেল। দুটি দল সমান সমান হওয়ায়
উত্তেজনা আরো বেড়ে গেল। এবং গোলের পর টুনুর পা ভালো হয়ে যায়। এর পর রণজিত একটি ও টুনু আরো দুটি গোল করে। এবং টাউন স্কুল ৪-১ এ জয়ী হয়। খেলা শেষে গাধার কান মলার ব্যাপারটি আবার উঠলে সমরেশ বলে উঠে, ‘মনে নেই! খেলার আগে টুনুর কান মলে দিয়েছিলুম! তাতেই গাধার কান মলার ফল হয়েছে।’ কিন্তু সবাই টুনুকে একবাক্যে হিরো বলে মেনে নেয়।
সঠিক অর্থ অভিধান
রেষারেষি-বিদ্বেষপূর্ণ প্রতিদ্বন্দ্বিতা। আরম্ভ-শুরু। রণসজ্জা-যুদ্ধের সাজ। কাতার-শ্রেণি। ক্যাপটেন-অধিনায়ক। কোমর বন্ধ- বেল্ট। সর্বনাশা-সমূহ ক্ষতিসাধন, ক্ষীণ-স্বল্প। দুশ্চিন্তা-খারাপ চিন্তা। জার্সি- নির্দিষ্ট পোশাক। তুক- জাদুমন্ত্র, বশীকরণের প্রকরণ। ঠাট্টা-ইয়ার্কি। হন্তদন্ত-ব্যস্তসমস্ত ভাবে। উস্কোখুস্কো-রুক্ষ ও অবিন্যস্ত। লোপাট-উধাও। শীদ্গির-অতি দ্রুত। বিষণ্ণ- দুঃখিত, ম্লান। বিমর্ষ-দুঃখিত, বিষণ্ণ। প্রাণপণ-যথাসম্ভব। প্রতিজ্ঞ-শপথ, সংকল্প। মজবুত-শক্ত। বিদ্যুৎবেগে-অতি দ্রুত বেগে। বিষম- প্রচণ্ড। বিরুদ্ধে-বিপক্ষে। ঠোকাঠুকি-ধাক্কা। ভ্যাবাচাকা-হতবুদ্ধি, বিহ্বল অবস্থা। জটলা-বহুলোকের একত্র সমাবেশ। উপক্রম- সূত্রপাত, আরম্ভ। উত্তেজনা-উদ্দীপনা, প্রবল মানসিক আবেগ। উৎসাহ-উদ্যম,
আগ্রহ, অধ্যবসায়। আক্রমণ- অন্যের প্রতি প্রবল বলপ্রয়োগ।
১. নীচের প্রশ্নগুলির উত্তর নিজের ভাষায় লেখো।
১.১ ‘শহরের মধ্যে বেশ একটু সাড়া পড়ে গেছে’-এই ‘সাড়া পড়ার’ কারণ কী?
১.২ ‘এই দুই স্কুলের ছেলেদের মধ্যে চিরকাল রেষারেষি’- কোন্ দুই স্কুলের কথা বলা হয়েছে?
১.৩ ‘হিঃ হিঃ-তুক্ করা হলো না’-বক্তা কে? কাকে সে একথা বলেছে? কখন বলেছে?
১.৪ গল্পে ফুটবল খেলার সঙ্গে সম্পৃক্ত কিছু শব্দ রয়েছে, যেমন-হাফ-ব্যাক, রাইট-ইন, গোলকিপার-সেন্টার ফরোয়ার্ড, ব্যাক-এরিয়া ইত্যাদি। আরো কিছু শব্দ তুমি গল্প থেকে খুঁজে নিয়ে লেখো। এছাড়া নিজস্ব কিছু সংযোজনও করতে পারো।
২. নীচের শব্দগুলি কোন্ মূল শব্দ থেকে এসেছে?
৩. পদ পরিবর্তন করো:
৪. বিপরীতার্থক শব্দ লেখো:
৫. সন্ধি বিচ্ছেদ করো:
৬. ‘ফিস ফিস করে বললে’ অর্থ অত্যন্ত আস্তে বা নিচু গলায় বলা বোঝায়। ‘কথা বলা’র অর্থ ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হতে পারে এমন কয়েকটি ধ্বন্যাত্মক শব্দ লেখো।
৭. ‘খেলোয়াড়গণ’-‘খেলোয়াড়’ শব্দের সঙ্গে গণ’। জুড়ে
৮. গল্প অনুসরণে নিজের ভাষায় উত্তর দাও+
৮.১ “আজকের খেলাটা যে খুব জমবে তাতে সন্দেহ নেই।” কোন্ বিশেষ দিনের কথা এখানে বলা হয়েছে? সেদিনের সেই ‘খেলা’র মাঠের দৃশ্যটি নিজের ভাষায় বর্ণনা করো।***
৮.২ “সমরেশদা কোথায় গেছে?”-এই সমরেশদার পরিচয় দাও। সে কোথায় কি উদ্দেশ্যে গিয়েছিলো? তার উদ্দেশ্য সফল হয়েছিল কি?***
৮.৩ “এই সময় মাঠে রেফারির বাঁশি বেজে উঠল”- রেফারিটি কে? তাঁর সম্পর্কে ছেলেদের ধারণা কীরূপ ছিল? খেলার মাঠে তিনি কেমন ভূমিকা পালন করলেন?
৮.৪ খেলার যে ফলাফল হলো, তাতে তুমি কি খুশি হলে? তোমার উত্তরের সমর্থনে যুক্তি দাও।
৮.৫ গল্পে যে ফলাফলের কথা বলা হয়েছে তার বিপরীতটি যদি ঘটত তাহলে গল্পের উপসংহারটি কেমন হতো তা নিজের ভাষায় লেখো।
৮.৬ গল্পে বলা হয়েছে- “আজ টুনুই আমাদের হিরো।”- তোমার
টুনু চরিত্রটিকে কেমন লাগল? সত্যিই কি নায়কের সম্মান তার প্রাপ্য?
৮.৮ “অন্ধ সংস্কারের প্রতি আনুগত্যের জোরে নয় প্রবল প্রচেষ্টা আর মানসিক জোরেই জীবনে সাফল্য আসে”- ‘গাধার
৯. তোমার দেখা/খেলা কোনো ফুটবল ম্যাচের অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে বন্ধুকে চিঠি লেখো।
দহেধার
মহুলা
,
২০-০২-২১
প্রিয় সন্দীপ,
আশা করি তুই ভালো আছিস, পুজোর ছুটি তোর ভালো কাটছে। প্রতিবারের মতো এবারও আমাদের ‘মহুলা বিবেকানন্দ সমিতি’ একটি ফুটবল ম্যাচের আয়োজন করেছিল লক্ষ্মী পুজোর দিন। ম্যাচটি হয়েছিল পার্শ্ববর্তী ক্লাব ‘সঞ্চিতা সংস্থা’র সঙ্গে। ম্যাচের প্রথম থেকেই ব্যাপক উত্তেজনা ছিল। মহুলা অঞ্চলের বিভিন্ন গ্রাম থেকে প্রচুর দর্শক এসেছিল। উভয় ক্লাবের গোলকিপার ছিল বাইরের। তারা উভয়েই সব গোল সেভ করে দিয়েছে। শেষপর্যন্ত পেনাল্টিতে ৫-৪ গোলে ‘সঞ্চিতা
সংস্থা’ জিতে যায়। পুজোর ছুটির পর ক্লাসের সবাইকে এই উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচের কথা জানাব। কাকু কাকিমাকে আমার প্রণাম জানাস। তুই ভালো থাকিস।
তোর বন্ধু
কৌশিক
প্রাথকের ঠিকানা
নাম: কৌশিক চক্রবর্তী
গ্রাম: শেঠপুকুর
পোস্ট: বারাসাত
জেলা: উত্তর চব্বিশ পরগনা
ব্যা ক র ণে র স হ জ পা ঠ
১. বিপরীত শব্দ লেখো:
দুঃখ, বিপক্ষ, খারাপ, উপায়, শুকনো, হার, জোরে, কিছুক্ষণ, শত্রু।
২. সমার্থক শব্দ লেখো:
হরিণ, ভাগ্য, বিমর্ষ, মাথা, চোখ, কপাল, হাত, কান, পা, তুক, ঠাট্টা।
৩. কারক ও বিভক্তি নির্ণয় করো:
৩.১ শহরের মধ্যে বেশ একটু সাড়া পড়ে গেছে।
৩.২ তারা রণসজ্জায় সজ্জিত হচ্ছে।
৩.৩ আজ সর্বনাশ হলো দেখছি!
৩.৪ তুমি ঠাট্টা করছ!
৩.৫ শহরে কোথাও একটি গাধা নেই।
৩.৬ নে সমরেশ শীঙ্গির তৈরি হয়ে নে।
৩.৭ পায়ের ব্যথায় দৌড়তে পারছি না।
৩.৮ মাঠে গিয়ে দাঁড়ালো।
৩.৯ আমরা কাপ জিতেছি।
৩.১০ আবার খেলা আরম্ভ হলো।