Class 7 Sahityamela
আঁকা, লেখা
অধ্যায় ১০
আঁকা-লেখা
কবি পরিচয়
কবি মৃদুল দাশগুপ্ত হুগলি জেলার শ্রীরামপুরে ১৯৫৫ সালে জন্মগ্রহণ করেন। উত্তরপাড়া কলেজে জীবনবিজ্ঞান নিয়ে পড়াশুনা করেছেন। বর্তমানে তিনি সাংবাদিকতার সঙ্গে যুক্ত। তাঁর প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘জলপাই কাঠের এসরাজ’। এছাড়া ‘এভাবে কাঁদে না’, ‘গোপনে হিংসার কথা বলি’, ‘সূর্যাস্তে নির্মিত গৃহ’ তাঁর বিখ্যাত কাব্যগ্রন্থ। ছোটোদের জন্য ছড়ার বই ‘ঝিকিমিকি ঝিরিঝিরি’, ‘আমপাতা জামপাতা’। প্রবন্ধ গ্রন্থ-‘কবিতা সহায়ক’।
কবির বৈশিষ্ট্য
১. মৃদুল দাশগুপ্ত সমাজ সচেতন ও দায়বদ্ধ কবি।
২. তিনি প্রতিবাদী কবি।
৩. তাঁর কাব্য-কবিতায় দুর্বোধ্য শব্দের পরীক্ষা নেই।
• কবিতাটির বিষয়বস্তু
‘আঁকা, লেখা’ কবিতাটিতে দুটি স্তবক। প্রথমটিতে আঁকার কথা, দ্বিতীয়টিতে লেখার কথা। কবি বলেছেন, তিনি যখন মনের আনন্দে রং দিয়ে ছবি আঁকেন তখন তিনটে শালিক ঝগড়া থামিয়ে দেয়। চড়ুই পাখি অবাক বিস্ময়ে তাকায়। মাছরাঙা মাছের কথা ভুলে গিয়ে, তার গায়ের নীল রংটি দিতে চায়। প্রকৃতিতে যে প্রজাপতির দল উড়ে বেড়াচ্ছে তারাও চাইছে ছবির মধ্যে থাকতে। এমনকি গর্তের মধ্যে থেকে ইঁদুরটিওপিটপিটে চোখে দেখছে ছবি আঁকা। আর যাদের নিয়ে এত কিছু সেই রং ও তুলিরা খুব খুশি হয়েছে। কেননা, তারা দুপুরে অলস সময় না কাটিয়ে নতুন কিছু সৃষ্টি করতে পেরেছে।
আর দ্বিতীয় স্তবকে আছে লেখার কথা। সন্ধ্যার সময় যখন চাঁদ তার রুপোলি আলোয় সমস্ত জগৎ ছেয়ে ফেলে, যেন মনে হয়, দুধের সর জমেছে, সেই সময়কার সুন্দর শীতল বাতাস যখন কাঁপন দেয়, তখনই শুরু হয় ছড়া লেখা। আর তাতে আকৃষ্ট হয়ে আকাশের তারার মালা খুব গোপনে কাছে নেমে আসছে। আর পাশের বকুল গাছে জোনাকির দল যেন তাদের আলোক ছটায় ‘অ’ ‘আ’ লিখছে। এই ছড়ার জন্যই হাওয়া কবিকে অন্যের কাছে নিয়ে যায়। এখানেই সৃষ্টির আনন্দ। এখানেই তাঁর সমস্ত পুরস্কার পাওয়া।
• নামকরণের সার্থকতা
কবিতাটির মুখ্য বিষয় ছবি আঁকা এবং ছড়া লেখা। সমগ্র কবিতা জুড়েই আঁকা এবং লেখার সম্পর্কে বলা হয়েছে। তাই কবিতার নাম ‘আঁকা, লেখা’ সার্থক হয়েছে।
আসলে একটি কবিতার যখন নামকরণ করা হয়, তখন কবির মূল উদ্দেশ্য থাকে পাঠক যেন সেই নামকরণের মধ্যে গভীর কোনো তাৎপর্য খুঁজে পায়। কবিতার প্রথম স্তবকে আঁকা সম্পর্কে এমনভাবে কবি লিখেছেন যেন প্রকৃতি ও পরিবেশের একটি বিমুগ্ধ ছবি আমরা পাই। দ্বিতীয় স্তবকে ঠিক তেমনই জ্যোৎস্নাভরা মাঠ, চাঁদের আলোর স্নিগ্ধ রূপ, বাতাসের কাঁপন ইত্যাদি প্রসঙ্গ এমনভাবে লেখা হয়েছে, যা সহজে আমাদের মন কেড়ে নেয়। তাই কবিতার এই নামকরণ অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক।
হা তে ক ল মে
১. ‘পিটপিটে চোখ’- শব্দটির মানে ‘যে চোখ পিটপিট করে তাকায়’।
এই রকম আরো পাঁচটি শব্দ তৈরি করো। একটি করে
দেওয়া হলো- ‘কুড়মুড়ে চানাচুর’।
উত্তর:
২. ঠিক বানানটি বেছে নাও:
২.১ মৎস্য/মৎস/মৎশ্য
উত্তর:
২.২ দুধের স্বর/দুধের সর/দুধের শর
উত্তর:
২.৩ কাপন/কাঁপন/কাঁপণ
উত্তর:
২.৪ ঈশৎ/ইষৎ/ঈষৎ
উত্তর:
• সঠিক অর্থ অভিধান
খুশ-খেয়াল-খাম খেয়াল। চিত্র-ছবি/প্রতিলিপি। অবাক্-নির্বাক্, বিস্মিত। মৎস্য-মাছ, মীন। ঝাঁক-দল। পিটপিটে-মিটমিট করে। সর-দুধের উপরের ঘন নরম আবরণ। পুরু-মোটা, ঘন। ঈষৎ-অল্প একটু। কাঁপন-কম্পন, স্পন্দন। পরম-চরম, অত্যন্ত। পুলক-আনন্দ, খুশি। পদক-কণ্ঠভূষণ, পুরস্কার।
৩. নীচে দেওয়া শব্দগুলির সমার্থক শব্দ কবিতা থেকে খুঁজে নিয়ে লেখো।
সামান্য-ঈষৎ; আনন্দ-খুশি; মীন-মৎস্য, নক্ষত্র-তারা,
মূষিক-
৪. ‘কম্পন’ শব্দ থেকে এসেছে ‘কাঁপন’ শব্দটি অর্থাৎ ‘স্প’ যুক্তাক্ষরটি ভেঙে যাচ্ছে। হারিয়ে যাওয়া ‘ম’ আগের ধ্বনিটিকে অনুনাসিক
করে তুলেছে এবং একটি নতুন ‘আ’ ধ্বনি চলে আসছে। এই নিয়মটি মনে রেখে নীচের ছকটি সম্পূর্ণ করো।
উত্তর:
৫. এক সঙ্গে অনেক প্রজাপতি থাকলে আমরা বলি ‘প্রজাপতির ঝাঁক’। এইভাবে আর কী কী শব্দ তৈরি করা যায়। শব্দঝুড়ি থেকে শব্দ নিয়ে নীচের শূন্যস্থানগুলি পুরণ করে দেখো।
সারি, যূথ, ঝাঁক, দল, বহর, পাল।
৫.২ কইমাছের ঝাঁক।
৫.১ ভেড়ার পাল।
৫.৪ নৌকার বহর।
৫.৩ হস্তী যুথ।
৫.৬ ছাত্র দল।.
৫.৫ সুপুরি গাছের সারি।
৬. নীচের বিশেষ্যগুলির বিশেষণের রূপ লেখো।
■ রঙ-রঙিন, চিত্র-চিত্রিত; মাঠ-মেঠো; লেখা-লেখ্য; পুলক- পুলকিত।
৭. নীচের বিশেষণগুলির পরে উপযুক্ত বিশেষ্য বসিয়ে বাক্য রচনা করো: ঈষৎ, বেজায়, পিটপিটে, পরম, নীল, গোপন
উত্তর:
৮. বিপরীতার্থক শব্দ লেখো: গোপন, ঈষৎ, খুশি, পুরু, ঝগড়া উত্তর: গোপন-প্রকাশ্য, খোলামেলা। ঈষৎ-বেশি। খুশি- অখুশি। পুরু-পাতলা। ঝগড়া-বন্ধুত্ব/সম্ভাব।
৯. নিম্নরেখ অংশগুলির কারকবিভক্তি নির্ণয় করো:
৯.১ তিনটি শালিক ঝগড়া থামায়।
উত্তর:
৯.২ গর্ত থেকে ইঁদুর, সেটাও পিটপিটে চোখ দেখছে চেয়ে।
উত্তর :
৯.৩ প্রজাপতির ঝাঁক চাইছে তাদের রাখি আমার আঁকায়।
উত্তর:
৯.৪ এবার যেন তারার মালা খুব গোপনে নামছে কাছে।
উত্তর:
৯.৫ সেই তো আমার পদক পাওয়া।
উত্তর:
১০. বাক্য বাড়াও :
১০.১ আমি যখন আঁকি (কী? কীভাবে?)
উত্তর:
১০.২ চাঁদের দুধের সর জমে যায়। (কোথায়? কেমন?)
উত্তর:
১০.৩ পিটপিটে চোখ দেখছে চেয়ে। (কে? কোথা থেকে?)
উত্তর:
১০.৪ ছড়া লেখার শুরু। (কার? কখন?)
উত্তর:
১০.৫ ‘অ’ লিখছে ‘আ’ লিখছে। (কারা? কোথায়?)
উত্তর:
১১. একটি বাক্যে উত্তর দাও।
১১.১ কবি কখন ছবি আঁকেন?
উত্তর:
১১.২ কখন তাঁর ছড়া লেখার শুরু?
উত্তর:
১১.৩ তিনটি শালিক কী করে?
উত্তর:
১১.৪ কে অবাক তাকায়?
উত্তর:
১১.৫ মাছরাঙা কী চায়?
উত্তর:
১১.৬ প্রজাপতিদের ইচ্ছা কী?
উত্তর:
১১.৭ গর্তে কে থাকে?
উত্তর:
১১.৮ চাঁদের পুরু দুধের সর কোথায় জমে?
উত্তর:
১১.৯ কারা, কোথায় অ-আ লিখছে?
উত্তর:
১১.১০ কবি কোন্ বিষয়কে ‘পদক পাওয়া’ মনে করেছেন?
উত্তর:
১২. দু’ তিনটি বাক্যে উত্তর দাও:
১২.১ কবি যখন ছড়া লিখতে শুরু করেন তখন চারপাশের প্রকৃতিতে
কী কী পরিবর্তন ঘটে?
উত্তর:
১২.২ কবি যখন ছবি আঁকেন তখন কী কী ঘটনা ঘটে? উত্তর: কবি যখন ছবি আঁকেন তখন তিনটি শালিক ঝগড়া থামায়, চড়ুই পাখি অবাক হয়ে তাকায়। মাছরাঙা মাছ ভুলে তার নীল রংটি ধার দিতে চায়। প্রজাপতির ঝাঁক ছবিতে থাকতে চায়। গর্ত থেকে ইঁদুরও পিটপিটে চোখে তাকায়। রং-তুলিরাও বেজায় খুশি হয়।
১২.৩ ‘তিনটি শালিক ঝগড়া থামায়’- কোন্ কবির কোন্ কবিতায় এমন তিন শালিকের প্রসঙ্গ অন্যভাবে আছে? ***
উত্তর:
১২.৪ মাছরাঙা পাখি কেমন দেখতে? সে মৎস্য ভুলে যায় কেন?
উত্তর:
১২.৫ ‘রং-তুলিরা বেজায় খুশি আজ দুপুরে আমায় পেয়ে।’- কবির এমন বক্তব্যের কারণ কী?***
উত্তর:
১২.৬ ‘অ’ লিখছে ‘আ’ লিখছে-কারা কীভাবে এমন লিখছে? তাদের দেখে কী মনে হচ্ছে?
উত্তর:
১৩. অনধিক দশটি বাক্যে উত্তর দাও:
১৩.১ ‘এই ছড়াতেই আজ আমাকে তোমার কাছে আনলো হাওয়া’ -কাকে উদ্দেশ্য করে কবি একথা বলেছেন? কবির আঁকা এবং লেখার সঙ্গে এই মানুষটির উপস্থিতির সম্পর্ক এবং গুরুত্ব বিচার করো।***
উত্তর:
১৩.২ এই কবিতায় যে যে উপমা ও তুলনা ব্যবহৃত হয়েছে, সেগুলি ব্যবহারের সার্থকতা বুঝিয়ে দাও।
উত্তর:
১৩.৩ ছবি আঁকা, ছড়া/কবিতা লেখার মধ্যে তুমি নিজে কোন্টা কেন বেশি পছন্দ করো তা লেখো।
উত্তর:
১৩.৪ তোমার নিজের লেখা ছড়া/কবিতা, নিজের আঁকা ছবিতে ভরিয়ে চারপাতার একটি হাতে লেখা পত্রিকা তৈরি করো। পত্রিকার একটি নাম দাও। তারপর শিক্ষিকা/শিক্ষককে দেখিয়ে তাঁর মতামত জেনে নাও।
সংযোজিত প্রশ্ন
একটি বাক্যে উত্তর দাও:
১. ‘আঁকা, লেখা’ কবিতায় কবির ছবি আঁকার প্রসঙ্গে কোন্ কোন্ প্রাণীর নাম এসেছে?
উত্তর:
২. কবির আঁকা ছবি কারা দেখেছে?
উত্তর:
৩. কারা কীভাবে কবির ছড়া লেখার সময় সন্তর্পণে আসে?
উত্তর:
৪. জোনাকিরা কোথায় কী লিখেছে?
উত্তর:
৫. মাঠে কী পুরু হয়ে আছে বলে কবির মনে হয়েছে?
উত্তর:
৬. ‘পুলক’ শব্দের অর্থ কী?
উত্তর:
ব্যাকরণের সহজপাঠ
১. বিপরীত শব্দ লেখো: পুরু, শুরু, খুশি, পেয়ে, গোপনে, পুলক, কাছে।
উত্তর:
২. সমার্থক শব্দ লেখো: চিত্র, ঝগড়া, মৎস্য, বেজায়, দুপুরে, পাখি, শুরু, গাছে, হাওয়া, চোখ, ধার, পুরু।
উত্তর:
৩. গদ্যে লেখো:
১. রং ছড়িয়ে খুশ-খেয়ালে আমি যখন চিত্র আঁকি।
উত্তর:
২. মৎস্য ভুলে মাছরাঙা তার নীল রংটি ধার দিতে চায়।
উত্তর:
৪. ‘আঁকা, লেখা’ কবিতার মধ্যে আছে এমন চারটি সম্বন্ধ পদ উল্লেখ করো।
উত্তর:
৫. ‘আঁকা, লেখা’ কবিতায় আছে এমন চারটি তৎসম শব্দ উল্লেখ করো।
উত্তর: